পাদ্রীশিবপুরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

পর্তুগীজদের আগমনের পরে এক পর্যায়ে ১৭৬৩ খ্রীস্টাব্দে রাজা বল্লভ সেনের আমলে পাদ্রীশিবপুর অঞ্চলে ৪ জন পর্তুগীজ বনিক আগমন করেন। তাদের নিয়ে আসা হয়েছিল মূলত একটি  মুল্লুকের কর আদায় করার জন্যে। তাদের দেখাশুনা ও আধ্যাত্মিক পরিচর্যাসহ সার্বিক পরিচালনার জন্যই একজন ফাদারকে ১৭৬৪ খ্রীস্টাব্দেপাদ্রীশিবপুরে প্রেরণ করা হয়। তাঁর নাম ফাদার রাফায়েল দ্য আনঞ্জোস। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, তখনকার সময় ফাদারগণ পাদ্রী নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। ১৭৬৪ খ্রীস্টাব্দে এই পাদ্রীর আগমন ও এই এলাকার দায়িত্ব তাঁর উপরে ন্যস্ত হবার পরেই এলাকাটির নাম হয় পাদ্রীশিবপুর বা পাদ্রীয়ান তাল্লুক (জমিদারী)। এই সময় থেকেই পাদ্রীগণ পাাদ্রীয়ান তাল্লুকের জমিদারের দায়িত্ব পালন করেন। পাদ্রীদের পক্ষে একাকী জমিদারী চালানো সহজ ছিলনা। তাই স্থাানীয় জনসাধারণের কাছ থেকে তাদের বিশেষ সহযোগিতার আবশ্যকতা ছিল। ফলে অত্র এলাকার অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাদ্রীয়ান তাল্লুকের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার প্রতিফলন দেখা যায় বিভিন্ন বাড়ির নামকরণে যেমন; নায়েব বাড়ি, মোক্তার বাড়ি,পঞ্চায়েত বাড়ি, পন্ডিত বাড়ি, চাপরাশি বাড়ি,পোষ্টমাষ্টার বাড়ি, শিকদার বাড়ি, ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু বাড়ির নামকরণ মানুষের পেশা অনুসারেই হয়েছে যেমন; জোলাবাড়ি, ভক্ত বাড়ি, পাঙ্খাওয়ালাবাড়ি, দোকানদার বাড়ি, বার্বুচি বাড়ি, ইত্যাদি ।

পূর্বেই উল্লেখ করেছি ফাদারগণ যখন পাদ্রীশিবপুরে এলেন তখন তাদের উপরেই জমিদারী চালানোর ভার অর্পিত হলো। এই পাদ্রীয়ান তাল্লুকের বিস্তৃতি কেবল বর্তমান খ্রিষ্টান এলাকাজুড়েই ছিল না। খ্রিষ্টান এলাকার চারিদিকে অনেক অঞ্চলই পাদ্রীয়ান তাল্লুকের অর্ন্তভ‚ক্ত ছিল।এই জমিদারী প্রথা ব্রিটিশ শাসনামল এমনকি পাকিস্তান শাসনামলেরও বেশকিছু বছর স্থায়ী ছিল। তবে এই জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয় ১৯৫৫খ্রীষ্টাব্দের শেষের দিকে। সর্বশেষ জমিদার ছিলেন ফাদার রড্রিক্স ।

 

পারের বাবুর বাড়ির সন্তান কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও সিএসসি মহোদয়। এই নামের বিশেষত্ব হলো অতীতে আমাদের বাড়ির অবস্থান ছিল একটি বিশাল আকারের দীঘির পাড়ে। এই দীঘির পাড়ে অবস্থিত বিধায় বাড়িটির নাম পাড়ের বাবুর বাড়ি হয়ে যায়। পাড়ের বাবু ছিলেন মূলত অভিজাত ব্যক্তি এবং প্রচুর জমিজমাও ছিল। বলা যেতে পারে অনেকটা জমিদারীর মতোই। একইভাবে দক্ষিণ পাদ্রীশিবপুরে একটি দীঘি আছে যার জন্য ঐ এলাকার নাম হয়ে যায় দীঘির পাড় এলাকা।বাবু নামে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অনেককেই অভিবাদন করা হতো। কারণ তখন গ্রামের সহজ সরল মানুষ সম্মান জানাতেই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অভিজাত বা অবস্থাসম্পন্ন লোকদের বাবু বলে সম্বোধন করতো।

For any inquiries please email

cardinalpdr43@gmail.com

 @ cardinal_porompora All right reserved.